বানারীপাড়ায় কোটি টাকার জমি জালিয়াতির মামলায় জামিন বাতিল – আ:লীগ নেতা কারাগারে
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি।
বরিশালের বানারীপাড়ায় কোটি টাকার মূল্যবান জমি জালিয়াতির মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং পৌর আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পরিতোষ গাইনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
মামলার পটভূমি
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর কুন্দিহার গ্রামের মৃত আব্দুল মতিন মৃধার ছেলে মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মৃধা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, এনআইডি জালিয়াতি ও ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে এসএ ১৪৪ নম্বর খতিয়ানভুক্ত ৪৫১/৪৫৪ দাগের ৬২ শতাংশ মূল্যবান জমি দখলের চেষ্টা চালান আসামিরা।
উক্ত জমির মূল মালিক ছিলেন নিবারণ মালী। ১৯৭০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী মতিবালা মালী দলিলের মাধ্যমে জমিটি আব্দুল মতিন মৃধার কাছে বিক্রি করেন। এরপর দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে বাদীপক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে জমিটি ভোগদখল করে আসছে ও নিয়মিত রাজস্ব পরিশোধ করে আসছে।
জাল নথি তৈরির অভিযোগ
এজাহারে আরও উল্লেখ আছে, জমিটির বাজারমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আসামি পরিতোষ গাইন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সহায়তায় জাল ওয়ারিশ সনদ, নকল পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় এসব নথি মিউটেশন করতে দাখিল করা হয়।
২০২২ সালের ৬ মার্চ সুভাষ মণ্ডল ‘মাধব মালী’ পরিচয়ে বানারীপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে মিউটেশন মামলা করেন। পরে তদন্তে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা লিখিতভাবে জানান, ওই এলাকায় ‘মাধব মালী’ নামে কোনো ব্যক্তি কখনো বসবাস করেননি।
এরপর ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর বাদী ভূমি অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট জাল কাগজপত্র সংগ্রহ করে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা করেন। বাদীর অভিযোগ—“পরিকল্পিতভাবে প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় আমাদের বৈধ জমি দখলের চেষ্টা হয়েছে।”
আদালতের সিদ্ধান্ত
বাদীপক্ষের আইনজীবী মির্জা ইমরান উল্লাহ বলেন, “পরিতোষ গাইন ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে জমি দখলের চেষ্টা করেছেন—এ সংক্রান্ত সুস্পষ্ট প্রমাণ মামলার নথিতে রয়েছে।”
আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে







































